নিজস্ব প্রতিবেদক:
আলোচিত সেনা কর্মকর্তা মেজর সিনহা হত্যা মামলার ৯ জানুয়ারী হতে ১২ জানুয়ারী পর্যন্ত চার দিনের যুক্তিতর্কের ৩য় দিনের এজলাস থেকে বেরিয়ে আসামী পক্ষের আইনজীবী এড. রানা দাশ গুপ্ত বলেছিলেন, মামলার তদন্তভার র্যাবকে দেয়ার মাধ্যমে প্রচলিত আইনের ব্যত্যয় হয়েছে । তাই এ তদন্ত প্রশ্নবিদ্ধ বলে উল্লেখ করেন। বিষয়টি আদালতকে অবহিত করেছেন বলেও জানান তিনি।
এদিকে বুধবার(১২ জানুয়ারি) যুক্তিতর্কের ৪র্থ দিনে আদালতের কার্যক্রম শেষে সাংবাদিকেরা এবিষয়ে জানতে চাইলে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী এড. সৈয়দ রেজাউর রহমান বলেন, আদালত বিষয়টি আমলে নেননি। আইন প্রয়োগকারী সংস্থা হিসেবে র্যাব তদন্তের ক্ষমতা রাখে, তারই আলোকে তারা মামলাটি তদন্ত করেছে ।
এরপর এ মামলায় ১৫ জন আসামীর বিরুদ্ধে অভিযোগ পত্র দাখিল করেছে। এটা আদালতই র্যাবকে দায়িত্ব দিয়েছে।
এদিকে বুধবার (১২ জানুয়ারী) ৪ দিনের যুক্তিতর্কের শেষ দিনে দেশের আলোচিত এই হত্যা মামলার রায়ের সময় নির্ধারিত হয়েছে। আগামী ৩১ জানুয়ারী এ মামলার রায় ঘোষণার দিন ধার্য করেছে আদালত।
বুধবার যুক্তিতর্ক শেষে জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ঈসমাইল রায়ের জন্য এই সময় নির্ধারণ করেন।
বুধবার যুক্তিতর্ক চলাকালীন ১০ মিনিট সময় প্রার্থনা করে বরখাস্ত ওসি প্রদীপ কুমার দাশ কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে বলেন মেজর অবসরপ্রাপ্ত সিনহাকে খুন করেছে পরিদর্শক লিয়াকত। এটা সে স্পষ্ট জানে এবং এবিষয়ে তার প্রতি সদয় বিবেচনা করার অনুরোধ জানান।
বক্তব্যের প্রেক্ষিতে এজলাস থেকে বেরিয়ে বাদী পক্ষের আইনজীবী এড. মোহাম্মদ মোস্তাফা ওসি প্রদীপ অন্যের উপর দায় চাপানোর জন্য শেষ পর্যায়ে এসে এমন বক্তব্য দিচ্ছেন উল্লেখ করে বলেন, ওসি প্রদীপের মুঠোফোনে নির্দেশের ভিত্তিতে লিয়াকত গুলি চালায় এবং পরে সয়ং ওসি প্রদীপ এসে পা দিয়ে মুখে পাড়া দিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করে।
প্রসঙ্গত, ২০২০ সালের ৩১ জুলাই রাতে টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের শামলাপুর তল্লাশি চৌকিতে পুলিশের গুলিতে নিহত হন সেনাবাহিনীর মেজর (অব.) সিনহা মো. রাশেদ খান। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে তিনটি (টেকনাফে দুটি, রামুতে একটি) মামলা করে। ঘটনার পাঁচ দিন পর অর্থাৎ ৫ আগস্ট কক্সবাজার আদালতে টেকনাফ থানার বহিষ্কৃত ওসি প্রদীপ কুমার দাশ, বাহারছড়া তদন্ত কেন্দ্রের পরিদর্শক লিয়াকত আলীসহ ৯ পুলিশের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন সিনহার বড় বোন শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস। মামলাটির তদন্তের দায়িত্ব পায় র্যাব।
২০২০ সালের ১৩ ডিসেম্বর ওসি প্রদীপ কুমার দাশসহ ১৫ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দেন তদন্তকারী কর্মকর্তা ও র্যাব-১৫ কক্সবাজারের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মো. খাইরুল ইসলাম।