রামু প্রতিনিধি:
কক্সবাজারের রামু উপজেলার জোয়ারিয়ানালা ইউনিয়নের প্রজ্ঞামিত্র বনবিহারের প্রয়াত অধ্যক্ষ সারমিত্র মহাথেরো’র পেটিকাবদ্ধ ও স্বরণসভা শেষ হয়েছে।
সোমবার প্রজ্ঞামিত্র বনবিহারের মাঠে এ অনুষ্টান হয়। গেলো ১৯শে এপ্রিল হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন সারমিত্র মহাথেরো।
সোমবার সকালে হাজার হাজার মানুষ শ্রদ্ধা জানাতে আসেন এই বৌদ্ধ ভিক্ষুকে। বাংলাদেশ সংঘরাজ ভিক্ষু মহাসভার সভাপতি একুশে পদকে ভূষিত ড. জ্ঞানশ্রী মহাথেরো’র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে শতাধিক ভিক্ষুসংঘ উপস্থিত ছিলেন।
কক্সবাজার-রামুর সাংসদ সাইমুম সরওয়ার কমল অনুষ্টানে উপস্থিত হয়ে বলেন, সারমিত্র মহাথেরো শুধুমাত্র বৌদ্ধদের ধর্মীয় গুরু হিসেবে নয় সারা রামু’র বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মানুষের আত্মার আত্মীয় ছিলেন। তার মৃত্যুতে আমাদের অপূরণীয় ক্ষতি হলো।
এদিকে অনুষ্টানে শ্রদ্ধা জানাতে আসেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. সুকুমল বড়ুয়া, বৌদ্ধ ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের ভাইস চেয়ারম্যান ও কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের সদস্য সুপ্ত ভূষণ বড়ুয়া, রামু উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প্রধান ডা: নোবেল কুমার বড়ুয়া, সাংবাদিক নীতিশ বড়ুয়াসহ অন্যান্যরা।
পেটিকাবদ্ধ অনুষ্টানের তাৎপর্য নিয়ে অধ্যাপক ড. সুকুমল বড়ুয়া আজকের পত্রিকাকে বলেন, একজন বৌদ্ধ ভিক্ষু কোন সাধারণ মানুষ নয়। সারাজীবন সংসার ত্যাগ করে ধ্যান-সাধনায় জীবন পার করেন। ৬ মাস থেকে শুরু করে ৬ বছর পর্যন্ত একজন বৌদ্ধ ভিক্ষুকে মমি করে রাখা হয়। তারপর আনুষ্ঠানিকভাবে অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া করেন বৌদ্ধ ধর্মের অনুসারীরা। মূলত প্রাণহীন দেহের রূপ পরিবর্তনের সময়টা বুঝার জন্যই এই রীতিনীতি গৌতম বুদ্ধের সময় থেকেই চলে আসছে।
বৌদ্ধ ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের ভাইস চেয়ারম্যান সুপ্ত ভূষণ বলেন, আমি এই গ্রামেরই সন্তান। সারমিত্র ভিক্ষু অত্যন্ত বিনয়শীল একজন ভিক্ষু ছিলেন। তার অন্তেষ্টিক্রিয়া নিয়ে আমাদের ট্রাস্টের পক্ষ থেকে আর্থিক সহযোগিতার ব্যবস্থা করা হবে। সারমিত্র ভিক্ষুর মৃত্যু আমাদের জন্য মেনে নেওয়ার মতো না।
প্রয়াত সারমিত্র ভিক্ষু’র পেটিকাবদ্ধ ও স্বরণসভা অনুষ্টানের আয়োজকদের মধ্যে নীতিশ বড়ুয়া ও শিপন বড়ুয়া বলেন, প্রায় দশ হাজারেরও অধিক মানুষ আজকে ভিক্ষুকে শ্রদ্ধা জানাতে এসেছেন৷ সকলের জন্য বিকালের খাবারের আয়োজন আছে। মঙ্গল প্রদীপ প্রজ্জ্বলনের মাধ্যমে আজকের অনুষ্টান সমাপ্ত হবে।
সোমবার পেটিকাবদ্ধ ও স্বরণসভা হলেও ঠিক কবে নাগাদ সারমিত্র ভিক্ষুর অন্তেষ্টিক্রিয়া হবে তা এখনো নিশ্চিত করেনি আয়োজকেরা।