শিপ্ত বড়ুয়া, রামু
অসহায় হয়ে থানা, আদালত, সাংবাদিক বিভিন্ন মহলের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন মা। রামুতে অ্যাসিড হামলার শিকার টিপু বড়ুয়া’র মা প্রকৃতা বড়ুয়া’র কথা বলছি। ২৫শে অক্টোবর মঙ্গলবার রাত ১০টা। কক্সবাজারের রামু চৌমুহনী স্টেশনে নিজেদের মোটর ওয়ার্কশপের দোকান বন্ধ করে হেঁটে বাড়ি যাচ্ছিলেন রামু দ্বীপ শ্রীকুলের টিপু ও দিপক বড়ুয়া। রামু চৌমুহনী ভিক্টর প্লাজার সামনে গেলে কিছু বুঝে উঠার আগেই হঠাৎ সিএনজিচালিত একটি অটোরিকশা থেকে তাঁদের গায়ে অ্যাসিড ছোঁড়া হয়।
আর মুহুর্তেই বুক, হাত ও মুখের এক পাশ ঝলসে যায় এই দুইজনের। এখনো চট্রগ্রাম মেডিকেলে ভর্তি থেকে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে টিপু বড়ুয়াকে। কিন্তু মায়ের বুক ফাঁটা আর্তনাদ থামছে না। অ্যাসিড হামলার মূল আসামী নিখিল বড়ুয়া পুলিশ সদস্য বলেই পার পেয়ে যাচ্ছেন বলে অভিযোগ টিপু বড়ুয়া’র মায়ের।
উল্লেখ্য যে, অভিযুক্ত পুলিশ সদস্য নিখিল বড়ুয়া অ্যাসিড হামলার শিকার টিপু বড়ুয়ার ভগ্নিপতি। তিনি রামু উপজেলার ফতেখাঁরকুল ইউনিয়নের ২নম্বর ওয়ার্ডের হাজারীকুল গ্রামের মৃত সীতানাত বড়ুয়ার ছেলে। সিআইডি সদস্য নিখিল বড়ুয়াকে সম্প্রতি কুমিল্লায় বদলি করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
হামলার দিন একই সাথে অ্যাসিড হামলার শিকার দিপক বড়ুয়া সামান্য সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরলেও বললেন ভালো নেই। এজাহারভুক্ত মূল আসামী এখনো গ্রেফতার না হওয়ায় অনিশ্চয়তায় কাটছে দিন, এবং মামলার আসামী পুলিশ সদস্য নিলিখ বড়ুয়া হুমকিও দিচ্ছেন বলে জানান তিনি।
এদিকে এমন নেক্কারজনক ঘটনার পর ফুঁসে উঠেছিলো রামুর সাধারণ মানুষ। হয়েছে মানববন্ধনও। এই অ্যাসিড হামলা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আমিরুল ইসলাম মুঠোফোনে টিটিএনকে জানান, তদন্ত চলছে। পুলিশ সদর দপ্তরের অনুমতি সাপেক্ষে গ্রেফতার করা হবে। যেহেতু আসামী একটা ডিপার্টমেন্টের লোক তাকে আটক করতে আইনগত কিছু নিয়ম মানতে হচ্ছে। অনুমতি পেলে গ্রেফতারের কথা জানান এই তদন্ত কর্মকর্তা।
এর আগেও সেপ্টেম্বর মাসে টিপু ও দিপকের ওপর ছুরিকাঘাতের ঘটনা ঘটে। সে ঘটনায় রামু থানায় অভিযোগের ভিত্তিতে দুইজনের নাম উল্লেখ করে একটি মামলা হয়েছিলো। সে মামলায় পুলিশ রিপন বড়ুয়া নামে একজনকে আটক করে। আবার এই একজনকেই অ্যাসিড হামলা মামলায় শোন এরেস্ট দেখানো হয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে অভিযুক্তদের গ্রেফতারের দাবী রামুর সচেতন মহলের। নাহলে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটতে পারে বলে মত বিশেষজ্ঞদের।