কাব্য সৌরভ, মহেশখালী:
মহেশখালীর মাতারবাড়ি বন্দর উন্নয়ন প্রকল্পের সড়ক ও জনপথ বিভাগের (সওজ) ২২৬ একর ভূমি অধিগ্রহণের ক্ষতিগ্রস্ত ভূমি মালিকদের সাথে জেলা প্রশাসনের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৪ জানুয়ারি) ইউনুছখালী নাছির উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে মহেশখালী উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে এই মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তা (এল.ও) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শুভাশীষ চাকমা বলেন, “দলিল খতিয়ান ও দাখিলা অনুসারে ভূমি মালিক ক্ষতিপূরণ পাবেন। অধিগ্রহণকৃত জায়গা কে চাষ করছে, এবং ক্রয়সূত্রে কেউ জমির মালিক হলে তাঁকে জমি ক্রয়ের দলিলাদী দিতে হবে। সে অনুসারে জমি মালিক ক্ষতিপূরণ পাওয়ার আওতায় আসবে।”
এসময় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মহেশখালী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও কালারমারছড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান তারেক বিন ওসমান শরীফ বলেন, কোনো বসতি উচ্ছেদ করে যাতে এই অধিগ্রহণ না হয়। উত্তর নলবিলার দরগাহ ঘোনা নামক এলাকার একটি পাড়ার উপর এই সড়কের ম্যাপ ছিলো। এ নিয়ে স্থানীয়রা মানববন্ধন করেছে। পাড়ার পশ্চিম অংশে জায়গা রয়েছে। অধিগ্রহণকৃত জায়গা যেন সে অংশে হয় তার আহবান জানিয়ে তিনি আরো বলেন, ক্ষতিপূরণের বিষয়ে সচ্ছতা থাকতে হবে। ক্ষতিপূরণ উত্তোলনে দালালের খপ্পরে পড়তে হয় জমি মালিকদের। তা না হলে ফাইল আটকে থাকে এমন অভিযোগ ভূমি মালিকদের দীর্ঘদিনের। প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা সিসিডিবি’র অফিস বদরখালী হওয়ায় যাতায়াত খরচসহ নানা ভোগান্তিতে পড়তে হয় ভূমি মালিকদের। তাই মহেশখালীতে এই অফিস স্থাপন করার জন্য সংশ্লিষ্টদের আহবান জানান তিনি।”
মতবিনিময় সভায়, জমি মালিকদের পক্ষ থেকে নানা অভিযোগ ও দাবী তুলে ধরা হয়, এসময় আতিকুর রহমান মিশু নামের একজন বলেন, “সিসিডিবি’র কর্মকর্তারা জমি মালিকদের নোটিশ দেয় না, তারা দালালদের হাতে নোটিশ দিয়ে চলে যায় অথবা অবৈধভাবে দখলে থাকা ব্যক্তিদের হাতে নোটিশ দিয়ে চলে যায়। এতে প্রকৃত জমি মালিকরা নোটিশ পায় না। আবু বক্কর ছিদ্দিক নামের অপরজন বলেন, মতবিনিময় সভায় জমি মালিকদের যেকোনো প্রয়োজনে মোবাইল নং দেয়া, প্রয়োজনে কল করলে অধিগ্রহণ সংক্রান্ত পরামর্শ দেয়ার বিষয়টি আইওয়াশ ও ভাউতাবাজি। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, মোবাইলে নয় সরাসরি এলও অফিসে গেলে এখানে উপস্থিত থাকা কর্মকর্তারা জমি মালিকদের মনে করে ভিক্ষুক। আমাদের সাথে কথাও বলেন না তারা। কিন্তু দালালদের সাথে তাদের দহরমমহরম আলাপ চোখে পড়ে। এ ভোগান্তি থেকে বাঁচতে জমি মালিকদের দালালের শরণাপন্ন হতে হয়।
প্রস্তাবিত প্রকল্পের বন্দর সড়ক কুহেলিয়া নদীর পাড় ঘেঁষে করলে চাষকৃত জমি রক্ষা পাবে এবং বেড়িবাঁধ টেকসই হবে বলে মতামত দেয়া হয় জমি মালিকদের পক্ষ থেকে। এই প্রকল্পের অধিগ্রহণকৃত অধিকাংশ জমি উত্তর নলবিলা মৌজার। তাই অধিগ্রহণ সংক্রান্ত দলিলপত্রাদির সহযোগিতা ও পরামর্শের জন্য সিসিডিবি অফিস উত্তর নলবিলায় করার আহবান ক্ষতিগ্রস্ত ভূমি মালিকদের।
এসময় মহেশখালী উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) এ.এফ.এম শামীম, জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা, ভূমি অধিগ্রহণ সংস্থা সিসিডিবির কর্মকর্তা কর্মচারি ও ক্ষতিগ্রস্ত ভূমি মালিকরা উপস্থিত ছিলেন।