মহেশখালী প্রতিনিধি:
মহেশখালীতে অভিযান চালিয়ে জলদস্যুদের ডেরা থেকে ১৬ জেলেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। এসময় তিন জলদস্যুকে আটক করা হয়েছে। উদ্ধার করা হয়েছে বিভিন্ন অস্ত্র ও অপহরণ-ডাকাতিতে ব্যবহৃত সরঞ্জাম।
বৃহস্পতিবার (২ ফেব্রুয়ারি) রাত আনুমানিক ৩টা থেকে ভোর সাড়ে ৪টা পর্যন্ত উপজেলার কুতুবজুমের ঘটিভাঙ্গায় এ অভিযান চালায় মহেশখালী থানা পুলিশ।
এই বিষয়ে মহেশখালী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আব্দুর রাজ্জাক মীর জানান, গত ২৯ জানুয়ারি রাত ৯টার দিকে কক্সবাজারের নাজিরার টেক এলাকা থেকে ১৬ মাঝি-মাল্লাসহ এফবি ভাই ভাই-০৩ নামের একটি মাছ ধরার ট্রলার ছিনতাই করে নিয়ে যায় জলদস্যুরা।
কক্সবাজার শহরের বাহারছড়া এলাকার জনৈক ছিদ্দিক আহমদের পুত্র শাহাদত হোছেন এর মালিকানাধীন এ ট্রলারটি সমুদ্র থেকে মাছ ধরে উপকূলে ফিরছিল।
এ ঘটনার পর ট্রলার মালিক পরদিন কক্সবাজার সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। ডায়রিতে উল্লেখ করা হয়- ট্রলারটি রাতে মাছ ধরে ফেরার সময় ট্রলারের মাঝি রাত ৯টার দিকে তাকে ফোন করে তারা ট্রলার নিয়ে সমুদ্রের নাজিরারটেক বরাবর পৌঁছেছেন এবং কক্সবাজার মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের দিকে আসছেন বলে জানান। এর পর দীর্ঘ সময় পর্যন্ত ট্রলারটি আর উপকূলে ফিরেনি এবং মাঝির সাথেও ফোনে সংযোগ স্থাপন করতে পারেনি। সে থেকে ট্রলারটি মাঝিমাল্লাসহ নিখোঁজ হয়ে পড়ে।
পরে মহেশখালী থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) ফরাজুল করিম তার দল নিয়ে রাতে ভ্রাম্যমান দায়িত্বকালে গোপন সংবাদে তথ্য পায় যে- ওই ট্রলারটি ছিনতাই ও মাঝি-মাল্লা অপহরণকাজে জড়িত কয়েকজন জলদস্যু মহেশখালীর কুতুবজোম ইউনিয়নের ঘটিভাঙ্গা এলাকার বাসিন্দা মঞ্জুর নামের এক জলদস্যুর বাড়িতে অবস্থান করছে। বিষয়টি তিনি তৎক্ষনাৎ মহেশখালী থানায় জানান এবং পরিদর্শক (তদন্ত) আব্দুর রাজ্জাক মীর এর নেতৃত্বে এসআই আবুবকর, এসআই ফরাজুল করিমসহ পুলিশ দল ঘটিভাঙ্গার ওই জলদস্যুর বাড়িটি ঘিরে ফেলে পরে বাড়িতে অভিযান চালায় পুলিশ। এ সময় কুতুবজোমের তাজিয়াকাটা এলাকার বাসিন্দা মোহাম্মদ জাফর এর পুত্র মোহাম্মদ কাইছার(১৯) ও আব্দুল মালেক এর পুত্র মোহাম্মদ সোনা মিয়া(২১)কে সহ অভিযানের এক পর্যায়ে পালিয়ে যাওয়ার মুহূর্তে ধাওয়া করে ওই এলাকার মকবুল আহমদের পুত্র মোহাম্মদ তারেক(২৬) নামের আরও এক জলদস্যুকে আটক করে পুলিশ।
পুলিশ জানায়, তাদের কাছ থেকে ২টি দেশীয় তৈরী একনলা বন্দুক, ১টি দেশীয় তৈরী এলজি, ২টি ধারালো কিরিস, ১টি দা, ১০টি মোবাইল ফোন, ২টি হাতঘড়ি, ফিশিং বোটের ইঞ্জিনের সেল্ফ উদ্ধার করা হয়েছে।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটক জলদস্যুরা কক্সবাজার শহরের বাহারছড়া এলাকার জনৈক শাহাদত হোছেন এর মালিকানাধীন ট্রলারটি মাঝি-মাল্লাসহ ছিনতাই করার কথা স্বীকার করেছে। পরে তাদের দেওয়া তথ্যমতে ছিনতাই করে আনা ওই ট্রলাটি উদ্ধার করা হয়, একই সাথে উদ্ধার করা হয় ট্রলারে থাকা অপহৃত ১৬ জন মাঝি-মাল্লা (জেলে) কেও।
এ বিষয়ে মহেশখালী থানায় পুলিশ বাদি হয়ে অস্ত্র আইনে একটি মামলা ও কক্সবাজার থানায় ট্রলার মালিক বাদি হয়ে ডাকাতির ঘটনায় আলাদা আরও একটি মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।