টিটিএন ডেস্ক:
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও বেসামরিক জনগণের নিরাপত্তাবিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি উজরা জেয়া এবং দেশটির দক্ষিণ ও মধ্য-এশিয়াবিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু।
বৃহস্পতিবার (১৩ জুলাই) সকালে গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন তারা।
সাক্ষাতে বাংলাদেশের আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন, যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নীতি, রোহিঙ্গা সংকটসহ বিভিন্ন ইস্যুতে আলোচনা হয়।
বাংলাদেশের ওপর আরোপিত মার্কিন ভিসা নীতি প্রসঙ্গে উজরা জেয়া বলেন, ভিসা পলিসি হচ্ছে অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য।
শেখ হাসিনা বলেন, অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য, মানুষের ভোটের অধিকারের জন্য সংগ্রাম করেছি।
তিনি বলেন, আমরা দেখেছি অতিতে বিএনপি কীভাবে ভোট কারচুপি করেছে। আমরা সংগ্রাম করে সেটি পরিবর্তন করেছি। স্বচ্ছ ব্যালট বাক্স এটা আমরা চালু করেছি।
বিগত দিনে বিএনপির আন্দোলনের কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ২০১৩-১৫ সালে বিএনপি ও তাদের মিত্রদের নৃশংসতা, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড এবং অগ্নিসন্ত্রাস করে, তাদের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে ৫০০ জন নিহত হন।
বিভিন্ন সময় হামলার শিকার হওয়ার কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, হত্যার উদ্দেশে বার বার তার ওপর হামলা হয়েছে। ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা করে তাকে হত্যার চেষ্টা হয়েছে। সেখানে নেতা-কর্মী, সমর্থকরা মানব প্রাচীর তৈরি করা তার প্রাণ বাঁচিয়েছিল।
সাক্ষাতে রোহিঙ্গা বিষয়ে কথা বলেন উজরা জেয়া। রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন এবং শরণার্থীদের সঙ্গে কথা বলার কথা প্রধানমন্ত্রীকে জানান মার্কিন আন্ডার সেক্রেটারি।
রোহিঙ্গাদের তাদের নিজ মাতৃভূমিতে প্রত্যাবর্তন নিশ্চিত করতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমন্বিত প্রচেষ্টা জোরদারের ওপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি।
রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিচালন ব্যয়ের জন্য যুক্তরাষ্ট্র ৭৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার দেবে বলে জানান উজরা জেয়া।
বিপুল সংখ্যক রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভূয়সী প্রশংসা করেন মার্কিন আন্ডার সেক্রেটারি উজরা।
এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের দুটি এলাকায় বাংলাদেশ বর্তমানে ১ মিলিয়নের বেশি রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়েছে।
তিনি বলেন, রোহিঙ্গা ক্যাম্পে মানব পাচার, অসামাজিক কর্মকাণ্ড চলছে, যেটি বাংলাদেশের নিরাপত্তার জন্য হুমকি।
বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে যুক্তরাষ্ট্র সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে বলে জানান যুক্তরাষ্ট্রের গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও বেসামরিক জনগণের নিরাপত্তাবিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি উজরা জেয়া।
শ্রমিক ইস্যুতে আলোচনাকালে তিনি বলেন, শ্রমিকদের কল্যাণে বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্র একসঙ্গে কাজ করবে এবং যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশকে সহায়তা করবে।
এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি ব্যক্তিগতভাবে মালিকদের চাপ দিয়ে শ্রমিকদের বেতন ও অন্যান্য সুবিধা বাড়িয়েছেন।
সাক্ষাতে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান ফজলুর রহমান, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন, যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মুহাম্মদ ইমরান।