শাহিদ মোস্তফা:
বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির বাইশারী থেকে শহিদুল ইসলাম নামের এক যুবকের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে এক নারীকে আটক করেছে রামু থানা পুলিশ। নিহত শহিদুল ইসলাম পার্শ্ববর্তী রামুর ঈদগড় ইউনিয়নের চরপাড়া এলাকার ইছহাক মিয়ার ছেলে। পেশায় একজন পাঠাও চালক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠক। ১৯ এপ্রিল দুপুরে বাইশারী ২নং ওয়ার্ডের রাঙাঝিরি রাবার বাগান থেকে তার লাশ উদ্ধার করেন বাইশারী পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ আবুল কাসেমের নেতৃত্ব একদল পুলিশ। লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরী পূর্বক ময়না তদন্তের জন্য বান্দরবান জেলা সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়।পরদিন ময়না তদন্ত শেষে দাফন করা হয়৷
নিহতের বাবা জানান, ১৭ এপ্রিল ইফতারের পর শহিদুল ইসলামের মোবাইলে একটি কল আসে, ডেলিভারি এক নারীকে হাসপাতালে আনার কথা বলে তাকে ঘটনাস্থলে নিয়ে যায় এক ব্যক্তি। তখন থেকে নিখোঁজ হন তার ছেলে শহিদুল ইসলাম।
নিহত শহিদুলের শ্বশুর মোক্তার আহমেদ জানান, শহিদুল ইসলামের সঙ্গে ঈদগড় বড়বিল এলাকার রশিদ আহমদের মেয়ে রেজিনা আক্তার নামের এক মেয়ের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। প্রায় চার মাস আগে রেজিনা আক্তারের বিয়ে ঠিক হলে তিন মাস পর তার মেয়েকে বিয়ে করেন। কিন্তু আগে ঠিক হওয়া রেজিনার বিয়েটি ভেঙে যায়। ভেঙে যাওয়ার পর থেকে পূনরায় প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে শহিদুল ইসলামকে বিয়ের জন্য চাপ সৃষ্টি করে রেজিনা। তাতে শহিদুল রাজি না হওয়ায় পরিকল্পিত ভাবে তাকে হত্যা করা হয় বলে অভিযোগ করেন তিনি।
নিহত শহিদুল ইসলামের ছোট ভাই জানান, তার ভাই নিখোঁজের পরদিন কথিত ঐ প্রেমিকা তার মুঠোফোনে কল করে শহিদুলের খবর নিতে বলেন এবং বাইশারী রাঙাঝিরি রাবার বাগানে খোঁজ নিলে সন্ধান পাওয়া যাবে বলেও জানায় ওই নারী।
এদিন খবর পেয়ে অন্যদের মতো তার এক সহকর্মীও ঘটনাস্থলে উদ্ধারে যান। এ সময় শহিদুলের শরীরের বিভিন্ন স্থানে ১৯ টির মতো ছুরিকাঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে বলে জানান তিনি।
বাইশারী পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ আবুল হাসেমের সাথে একাধিক বার মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়, কিন্তু সংযোগ না পাওয়ায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে রামু থানার ওসি তদন্ত বলেন, খবর পেয়ে নাইক্ষ্যংছড়ি থানার সাথে সহযোগিতা করার জন্য রামু থানা থেকে একদল পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। আটকের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ঘটনাস্থল যেহেতু নাইক্যংছড়ি থানায় আটকের বিষয়টি তারাই জানবে, একজন নারী আটকের সংবাদ তিনিও পেয়েছেন তবে নিশ্চিত নন।
শহিদুল ইসলামের জানাজা পরবর্তী ঈদগড় বাজারে বিশাল মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেন স্থানীয়রা। প্রতিবাদ সমাবেশ থেকে সন্ত্রাসীদের আটকের দাবি জানানো হয়।