ইমরান হোসাইন :
কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলার বারবাকিয়া ইউনিয়নের পাহাড়িয়া খালী গ্রামে দুই শতাধিক পরিবার নিয়ে রাখাইন বসতি গড়ে উঠে ১৮৯৮ সালে। কিন্তু নানা সংকটে মাত্র ৩১ টি পরিবার এখন বসবাস করে এখানে। ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান পালনে কোন বাঁধা না থাকলেও কর্মসংস্থানের জন্য জীবন যুদ্ধে পিছিয়ে পড়ছে তাঁরা। রাখাইন সম্প্রদায় বান্ধব শিক্ষাব্যবস্থা তৈরি না হওয়ায় কর্মসংস্থানেও তাঁরা আছে পিছিয়ে।
জায়গার অভাবে জুমচাষ করতে না পারা, বাঙালি পাড়ায় তাঁতের ব্যবসা বন্ধ হয়ে পড়ায় অলস সময় কাটাচ্ছে পেকুয়ায় বসবাস করা এসব রাখাইন সম্প্রদায়ের নারী-পুরুষরা। কিছু পুরুষ সদস্য ঋণের টাকায় রিক্সা কিনে চালাচ্ছেন। আবার কিছু নারী বাঁশ বেতের ঝুড়ি তৈরি করে ও গবাদি পশুপাখি পালন করে উপার্জনের চেষ্টা করছে। তারপরও অর্থকষ্ট পিছু ছাড়ছে না বলে জানান তারা।
এমন জীবিকার সংকট ও কর্মসংস্থানের অভাবে বাধ্য হয়ে এখানকার রাখাইন জনগোষ্ঠীর মানুষেরা বান্দরবান, কক্সবাজার ও চকরিয়া উপজেলার বিভিন্ন পাহাড়ি এলাকার দিকে ধাবিত হচ্ছে বলে জানান পেকুয়া উপজেলা নৃতাত্ত্বিক জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধি আলহারি রাখাইন। সমাজে তাঁদের টিকিয়ে রাখতে সরকারি প্রণোদনার দাবি জানান তিনি।
শিক্ষা-দীক্ষা ও কর্মসংস্থানে পিছিয়ে পড়া এ জনগোষ্ঠীর অভাব রয়েছে নানা নাগরিক সুবিধার। এনজিও পরিচালিত একটি প্রাক-প্রাথমিক বিদ্যালয় ও মাতৃভাষা শিক্ষাকেন্দ্রের কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে দীর্ঘদিন ধরে। সুপেয় পানি, শিশুদের নৈমিত্তিক শিক্ষা ও কর্মসংস্থানের দাবি করেছেন কক্সবাজার জেলা বৌদ্ধ সুরক্ষা পরিষদের পেকুয়া উপজেলার শাখার নেতা উচিংলা রাখাইন।
এদিকে রাখাইন জনগোষ্ঠীকে নিয়মিত সরকারী সহায়তা দেওয়ার কথা জানিয়ে বারবাকিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বদিউল আলম বলেন, তাঁদের আরো সহায়তা করার জন্য চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
সরকারী সহায়তা ও স্থানীয়দের সহযোগিতা পেলে শিক্ষা-দীক্ষা ও আত্মকর্মসংস্থানে ঘুরে দাঁড়িয়ে নিজেদের টিকিয়ে রাখতে পারবেন পেকুয়ায় বসবাস করা রাখাইন সম্প্রদায়ের লোকজন। এমনটাই মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।