আজিম নিহাদ:
কক্সবাজার সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মুনিরুল গিয়াস বেশ কিছুক্ষণ বুঝানোর পর এবং সকল সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দেওয়ায় এই কিশোর অবশেষে নিচে নেমে আসতে রাজি হয়। এরপর তাকে উদ্ধার করে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। এর আগেই ওসাইমিম নামের এই কিশোর ব্লেড দিয়ে আঘাত করে নিজেকে রক্তাক্ত করে।
শনিবার বিকেলে নির্মাণ কাজের জন্য তৈরী করা অস্থায়ী সিঁড়ি বেয়ে কক্সবাজার সদর মডেল থানা ভবনের তিনতলার সানসেটে উঠে আত্মহত্যার চেষ্টা করা ওসাইমিম উখিয়ার পালংখালী ইউনিয়নের শাহজাহানের ছেলে এবং বায়তুশ শরফ জব্বারিয়া একাডেমির ১০ম শ্রেণির ছাত্র।তারা বর্তমানে শহরের পাহাড়তলী কচ্ছপিয়াপুকুর এলাকায় থাকেন।
হাসপাতালে ওসাইমিমের মা এবং বন্ধুর সাথে কথা বলে টিটিএন। তারা জানান, এর আগেও ব্লেড দিয়ে আঘাত করে আত্মহত্যা করার চেষ্টা করেছিল সে। মায়ের দাবী, এসএসসি পরীক্ষা সামনে চলে আসায় মোবাইল ব্যবহার কমানোর জন্য তাকে শাসানো হয়। এটাকে কেন্দ্র করে আত্মহত্যার চেষ্টা বলে দাবী তার মায়ের।
এদিকে ওসাইমিমের সাথে থাকা ব্যাগ থেকে একটি সুইসাইড নোট উদ্ধার করে পুলিশ। ওই সুইসাইড নোটে পুলিশকে সুবহা নামে নিহত এক কিশোরীকে বিচার পাইয়ে দিতে অনুরোধ করেন।
সুবহাকে নিজের প্রেমিকা পরিচয় দিয়ে ওসাইমিম লিখেন, ২০২০ সালে ওই মেয়ের সাথে পরিচয় হয় তার। তবে কিভাবে পরিচয় সেটি উল্লেখ করেনি সে। গত রমজানে সুবহার বাবা সুবহাকে যৌন নির্যাতনের চেষ্টা করে। এরপর তার বাবা মায়ের সংসার ভেঙে যায়। এক পর্যায়ে বাবার যৌন নির্যাতনের চেষ্টা এবং পারিবারিক কারণে সুবহা আত্মহত্যা করেছে বলে ওই সুইসাইড নোটে উল্লেখ করে ওসাইমিম।
সুবহার বাড়ি নারায়নগঞ্জের হাজিগঞ্জে উল্লেখ করে ওসাইমিম লিখেন, যাদের কারণে সুবহা পৃথিবী থেকে বিদায় নিয়েছে তাদের বিচারের মুখোমুখি করতে সে অনেকের কাছে ধর্ণা দিয়েছেন। কিন্তু কেউই তাকে সহযোগিতা করেনি। সুবহাকে বিচার পাইয়ে দিতে না পারায় সেও পৃথিবী ছেড়ে যাচ্ছেন বলে সুইসাইড নোটে উল্লেখ করে সে। কথিত সুবহা নামের ওই কিশোরীর মৃত্যুর বিষয়টি সামনে আনার জন্য থানা ভবনকে সুইসাইডের জন্য বেছে নেন বলে দাবী করেন এ কিশোর। এসব বিষয় নিয়ে হাসপাতালেই কথা বলেন ওসাইমিম।
সুইসাইড নোটে উল্লেখ করা বিষয়গুলো খতিয়ে দেখার পাশাপাশি ওই কিশোর মানসিক সমস্যায় আছে কিনা সেটি খতিয়ে দেখা হবে বলে জানান সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মুনিরুল গিয়াস।
সুইসাইড নোটে উল্লেখ করা কথিত সুবহার মৃত্যুর ঘটনাটি বেশ ভয়াবহ। যদি সেটি সত্যি হয়ে থাকে, তাহলে ওই ঘটনা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার পাশাপাশি ওসাইমিমের আত্মহত্যা চেষ্টার আসল কারণ খুঁজে বের করার দাবী সচেতন মহলের।