বিশ্বজিত সেন :
ফেব্রুয়ারি মাসটা আসলে বাঙলা ভাষা,সংস্কৃতি, চেতনার এক বহ্নিজ্বলার মাস,যেটাকে ঘিরে সমগ্র জাতি- বিশ্বের এক বিশেষ অস্তিত্ব অনুভূতির প্রকাশ ।যেখানে পথ খুঁজে পেয়েছিল সমগ্র জনগোষ্ঠী ।সেরকম ৩৮ বছর আগে ১ ফেব্রুয়ারিতে সুমিত শব্দ উচ্চারণের পথ শুরু হয়েছিল শব্দায়নের বাঁধনে।
কটেজ তটিনীতে প্রয়াত কাজী আরিফ,জসিমউদ্দিন বকুল, প্রয়াত নজরুল ইসলাম বকশী, প্রজ্ঞা লাবনীর মাধ্যমে শুরু হলো শব্দায়নের অভিযাত্রা। কাজী আরিফ নামকরণ করে সংগঠন গড়ে তোলা এবং শুদ্ধ উচ্চারণের অভিযাত্রার যোয়ালটা তুলে দিয়েছিলেন প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক বকুলের কাঁধে ।এর সাথে অবশ্য নির্বাহী পরিচালক নজরুল ইসলাম বকশী সহ অন্যান্যরা উজান যাত্রার কাজটি টেনে নিয়েছেন দীর্ঘ ৩৮ বছর। এর মাঝে অনেক ইতিহাস– কাল বয়ে গেছে।রচিত হয়েছে জাতীয় সংস্কৃতি, সামাজিক,সাংস্কৃতিক মানবিক ধারায় উজ্বল অধ্যায় । বিভিন্ন নান্দনিক প্রশিক্ষণ,বহুমাত্রিক কার্যক্রম, স্বীকৃতি এবং অর্জন শব্দায়নের ভান্ডারকে ভরাট করছে।
দশকের পর দশক পরিচালক জসিমউদ্দিন বকুল সহ বিভিন্ন প্রজন্মের ত্যাগ তিতিক্ষা অংশগ্রহণ শুদ্ধ সংস্কৃতির অভিযাত্রাকে নিরন্তর গতি দিয়েছে,প্রাণ দিয়েছে দেশজনীন বাঙালি চেতনার সোপানে। শব্দায়ন আঞ্চলিক নয়, একটি জাতীয় পর্যায়ের প্রতিষ্ঠান এটাই কাজকর্মে এবং গুণীজনদের অংশগ্রহণে বিশেষ স্বকীয়তা অর্জন করেছে ।
২০২৩ এর ১ ফেব্রুয়ারি শব্দায়নের ৩৯ বছরে পদার্পণের শুভ জন্মদিন। এরপর ধীরে ধীরে ৪০ আসবে। আবার ৫০ হবে—– । অনেকেই চলে গেছেন, যাবেন, সংযুক্ত হবেন।আবার কেউ-কেউ ঝরেই যাবে জীবন থেকে,এভাবেই বহমান কাল এগিয়ে যাবে। এটাইতো সময়ের নিয়তি—–। সবকিছুর পর আমাদের অতীত- বর্তমান- ভবিষ্যতের শিশু, কিশোররা সহ সবাই বলবে তিন কালের গৌরব শব্দায়ন ছিল, শব্দায়ন আছে, শব্দায়ন থাকবে। মানুষের স্বর ও সুর হিসেবে শব্দায়ন বেঁচে থাকুক সকল জীবনের অন্তরে। জন্ম যাত্রায় অশেষ শুভ কামনা।
শব্দায়নের জন্য যন্ত্রণা এবং আকুতি ।
বিড়ালের ছানা নিয়ে মা যেমন একবার এখান থেকে ওখানে যায়, কোন স্থিতি নেই । শব্দায়নের জীবনটা অনেকটা ঐরকম।প্রাক চল্লিশ বছর ধরে এই রকমই চলছে । সময়ের কীর্তিমান প্রতিষ্ঠানটির নিজস্ব কোন ঘর,বাড়ি,একাডেমিক ভবন, স্হায়ী ঠিকানা নেই! অথচ সংগঠনটি নীরবে সরবে করে যাচ্ছে নিরন্তর বাঙালি সংস্কৃতির শুদ্ধতম কাজ। জনপ্রতিনিধি, জেলা প্রশাসক,প্রশাসন সহ সকলের কাছে বিনীত আবেদন- শব্দায়ন কে একটা ঘর দিন, জায়গা দিন, ঠিকানা দিন।এতে আপনারা আরো বড় হবেন, বড় হবে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় শুদ্ধাচারের বাঙালি সংস্কৃতি।
সবাইকে মহান একুশের শুভেচ্ছা ।
লেখক: সিনিয়র সাংবাদিক