মোহাম্মদ নোমান, টেকনাফ :
টেকনাফের নেটং পাহাড়। অনেকে বলেন এখানে রয়েছে ২য় বিশ্বযুদ্ধের স্মৃতি চিহ্ন বাঙ্কার। আবার অনেকে বলেন এখানে ছিলো বৌদ্ধ ধর্মীয় গুরুদের ধ্যানাগার।
নেটং পাহাড়ের ভূমি থেকে ২০০ ফুট উঁচুতে পাহাড়ের গায়ে খোদাই করা তিন প্রকোষ্ঠ বিশিষ্ট এই স্থাপনাটির তিনটি প্রবেশ পথের মোট প্রস্থ ২৫ ফুট। পাথর কেটে বানানো এধরনের গুহা বাংলাদেশে দ্বিতীয়টি নেই।
জানা যায়, দেশ ভাগের পূর্বে নাইট্যংপাড়া অঞ্চলটি ছিলো রাখাইন অধ্যুষিত এলাকা। ১৯৪৭ সালে ব্রিটিশের কবল থেকে ভারতীয় উপমহাদেশ মুক্ত হাওয়ার আনুমানিক এক বছর পর বার্মা ব্রিটিশের হাত থেকে মুক্ত হয়। এরপরই এ অঞ্চলের রাখাইনরা বার্মায় পাড়ি জমায়।
স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, এটি ছিলো বৌদ্ধ ধর্মালম্বীদের প্রাচীন ধ্যানাগার। ধ্যান করার জন্য প্রয়োজনীয় বসার পাঠাতন মাঝখানের প্রকোষ্ঠে এখানে সুস্পষ্ট। সেখানে বসে কোন সাধক কিংবা মনীষী তার আধ্যাত্মিক সাধনায় মগ্ন থাকতেন।
কক্সবাজার জেলা আদিবাসী ফোরামের সভাপতি থোইঅং বলেন, টেকনাফের নাইট্যংপাড়ার কোস্টাল ফরেস্ট অফিস সংলগ্ন পাহাড়ি পথ বেয়ে উঠলেই ধ্যানাগারটি দৃশ্যমান হবে। বৌদ্ধ ধর্মের অনুসারী ভিক্ষুগণ ধ্যানে মগ্ন থাকার নিমিত্তে এ ধ্যানাগারে অবতারণা করেন। পাহাড়ের নিচে বেশ কিছু জায়গা জুড়ে রয়েছে বৌদ্ধ ধর্মালম্বীদের মৃতদেহ সৎকার করার শশ্মান । শুধুমাত্র বৌদ্ধদের ধর্মীয় গুরুদের মৃতদেহ সৎকারের জন্য সংরক্ষিত ছিলো এটি।
এছাড়াও পাহাড়ের শীর্ষে গৌতম বুদ্ধের সুবিশাল মুর্তি এবং বৌদ্ধদের মন্দির ছিলো। যেখানে অনেক বৌদ্ধ ভিক্ষু এবং ভান্তের বসবাস ছিল। তবে কালের বিবর্তনে সেই বৌদ্ধ মুর্তি ও প্যাগোডা আর নেই বলে জানান থোইঅং।
সুষ্ঠু রক্ষণাবেক্ষণ ও পৃষ্ঠপোষকতা এবং সংস্কারের অভাবে ঐতিহাসিক স্থাপনাটি অনেকটা নিশ্চিহ্ন হওয়ার পথে।