ইফতিয়াজ নুর নিশান, বিশেষ প্রতিনিধি:
বিশ্বজুড়ে সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত ও মুক্ত গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠায় কাজ করা বৈশ্বিক সংস্থা – কমিটি টু প্রোটেক্ট জার্নালিস্টস (সিপিজে), টিটিএনের তিন সংবাদকর্মীর উপর বিপন্ন হাঙ্গর পাচারকারী চক্রের হামলার ঘটনায় নিরপেক্ষ তদন্ত ও অভিযুক্তদের শাস্তি চেয়ে বিবৃতি প্রকাশ করেছে।
১৮ মে ( বুধবার), নিজেদের ওয়েবসাইটে
“বাংলাদেশে সাংবাদিক ছুরিকাহত, লাঞ্চিত” শিরোনামে বাংলাদেশের স্থানীয় সময় রাত ১০ টা ১৮ মিনিটে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে সংস্থাটি দাবি করেছে, “বাংলাদেশের প্রশাসনকে কক্সবাজার থেকে প্রচারিত গণমাধ্যম দি টেরিটোরিয়্যাল নিউজ -টিটিএন এর প্রধান প্রতিবেদক আজিম নিহাদ, প্রতিবেদক রাহুল মহাজন ও ক্যামেরা পার্সন লোকমান এর উপর হামলা ঘটনাকে দ্রুত ও স্বচ্ছ তদন্ত করার উদ্যোগ নিতে হবে।”
পাশাপাশি নারায়ণগঞ্জে সম্প্রতি সংগঠিত সাংবাদিকদের উপর আরো একটি হামলার তদন্তও দাবি করা হয় প্রতিবেদনে।
যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসি থেকে সিপিজে এর এশিয়া অঞ্চলের প্রকল্প সমন্বয়ক স্টিভেন বাটলারের উদ্ধৃতি দিয়ে যেখানে বলা হয়, ” বাংলাদেশের প্রশাসন কক্সবাজার এবং নারায়ণগঞ্জে সাংবাদিকদের উপর এই বেপরোয়া হামলাকে শাস্তির বাইরে যেতে দিতে পারে না।”
উদ্ধৃতিতে বাটলার আরো বলেন, ” সাংবাদিকদের উপর হামলা করা বাংলাদেশের জনগণের তথ্যের অধিকারের উপর আঘাত হানার সমান। কর্তৃপক্ষকে উভয় ঘটনারই দ্রুত ও নিরপেক্ষ তদন্ত পরিচালনা করতে হবে।”
হামলায় অভিযুক্তদের জবাবদিহিতার আওতায় আনা এবং দেশের সাংবাদিকদের নিরাপত্তাকে অগ্রাধিকার দেওয়ার জোড়ালো দাবিও জানান বাটলার।
প্রসঙ্গত, আইন না মেনে কক্সবাজারের বিভিন্ন উপকুলীয় এলাকা থেকে অবৈধভাবে হাঙ্গর সংগ্রহ করে ঐ চক্রটি হাঙ্গরের বিভিন্ন অংশ এবং বিশেষ কায়দায় উৎপাদিত তেল বিদেশে চড়ামূল্যে পাচার করে আসছিলো। চক্রের তথ্য পেয়ে সচিত্র প্রতিবেদন তৈরির কাজ করছিলেন অনুসন্ধানী সাংবাদিক আজিম নিহাদ।
গত ০৮ মে (রবিবার) সকালে শহরের নুনিয়ারছড়ায় হাঙরের তেলের কারখানায় অনুসন্ধান করতে গিয়ে
পাচার চক্রের মূলহোতা হিসেবে পরিচিত স্থানীয় বাসিন্দা মোহাম্মদ আলমগীরের ছোটভাই মোস্তাক আহমেদের হামলার শিকার হন নিহাদ সহ তিন সংবাদকর্মী, যেটির একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।
ভিডিওতে “সারা বাংলাদেশ কিছু করতে পারেনি, তোরা কি করতে পারবি?” বলে দেওয়া মোস্তাকের দম্ভোক্তি নিয়ে সারাদেশে নিন্দার ঝড় উঠে, প্রতিবাদ জানিয়ে কক্সবাজারে মানববন্ধন ও সমাবেশ করে বিভিন্ন সংগঠন।
তবে, এঘটনায় কক্সবাজার সদর থানায় তিন জনের নাম উল্লেখ করে ও আরো তিন-চার জন অজ্ঞাত আসামী করে দায়ের করা মামলার পর দশদিন অতিবাহিত হলেও এখনো পর্যন্ত অভিযুক্ত কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।
সিপিজে এর প্রতিবেদন টি পড়তে ক্লিক : https://cpj.org/2022/05/journalists-stabbed-assaulted-in-bangladesh/