রবিবার, এপ্রিল ২, ২০২৩

বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ সবার আগে

জেলিফিশে পাল্টে যেতে পারে দেশের অর্থনীতি

নিজস্ব প্রতিবেদক :

গত আগস্টের শুরুর দিকে হঠাৎ কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতে ঢলে ঢলে ভেসে আসে মৃত জেলিফিশ। কেন হঠাৎ এত জেলিফিশ ভেসে আসলো তা নিয়ে উদ্বেগ তৈরী হয় সর্বমহলে। অনেকে ধারণা করেছিলেন সমুদ্রে বড় ধরণের পরিবেশ বিপর্যয় হয়েছে।

তবে এর কারণ উদঘাটনে নেমে অনেকটা ইতিবাচক তথ্য পেয়েছে বাংলাদেশ সমুদ্র গবেষণা ইনস্টিটিউট। দীর্ঘ গবেষণার পর তারা জানতে পারেন, কক্সবাজার উপকূল থেকে প্রায় ৩৫ নটিক্যাল মাইলে দূরে সমুদ্রে সেই সময় পানির ঘূর্ণয়ন তৈরী হয়েছিল। যেখানে এর আগে সাইটোপ্লাটুন ও নাইট্রেডের উপস্থিতি এবং লবণাক্ততা ও তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে জেলিফিশের আধিক্য দেখা গিয়েছিল। পরে ৬৫ দিন বন্ধ থাকার পর জেলেরা মাছ ধরতে গেলে জালে আটকে মারা যায় শত শত জেলিফিশ। পরে সেগুলো পানির ঘূর্ণনয়নের কারণে কূলে ভেসে আসে।

বাংলাদেশ সমুদ্র গবেষণা ইনস্টিটিউঢের মহাপরিচালক সাঈদ মাহমুদ বেলাল হায়দার বলেন, জেলিফিশকে সুষ্ঠুভাবে রপ্তানি করা গেলে দেশের অর্থনীতিতে নতুন দিগন্তের উন্মোচন হবে জানিয়ে গবেষণায় যুক্ত বিজ্ঞানীরা বলছেন, বঙ্গোপসাগরে যে প্রজাতির জেলিফিশের আধিক্য রয়েছে তার নাম লোবোনিমুইডিস রোবসটাস বা স্থানীয় ভাষায় সাদা নুইন্না। এটি খাওয়ার উপযোগী এবং এর পাশাপাশি কসমেটিক ও ওষুধ শিল্পে ব্যবহার করা হয়। পৃথিবী ব্যাপী ৫৬২ বিলিয়ন ডলারের একটি বাণিজ্য রয়েছে শুধু জেলিফিশের। সেই বাণিজ্যিক অবস্থানে অংশ নিতে পারলে জেলিফিশের সবচেয়ে বড় রপ্তানিকারক দেশ হবে বাংলাদেশ।

তিনি আরো বলেন, জেলিফিশকে স্থানীয় জেলেরা একপ্রকার অখাদ্য বা ব্যবহার অনুপযোগী সামুদ্রিক প্রাণী হিসাবেই দেখেন। তাই এটি আহরণ করা হয়না বাংলাদেশে।

জেলেরা বলছেন, জেলিফিশ যে খাওয়া যায় বা ব্যবহার উপযোগী তা তাদের জানা নেই। তাছাড়া স্থানীয়ভাবে বাণিজ্য বা চাহিদাও নেই। তাই জালে আটকালে সেগুলো সাগরে ফেলে দেয় তারা।

জেলিফিশের সবচেয়ে বড় বাজার চীন, হংকং, ফিলিপাইন, জাপানসহ বিশ্বের অন্যতম বড় বড় রাষ্ট্রগুলো। সেসব দেশে রপ্তানির পাশাপাশি সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে দেশের অভ্যন্তরীণ বাজার তৈরী করতে উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ সমুদ্র গবেষণা ইনস্টিটিউট।

বাংলাদেশ সমুদ্র গবেষণা ইনস্টিটিউটের সাঈদ মাহমুদ বেলাল হায়দার আরো বলেন , ৯০ ভাগ পানি দিয়ে তৈরি এই সামুদ্রিক প্রাণীর মস্তিষ্ক, রক্ত বা হাড় বলে কিছু নেই। ধরা পড়ার কিছুক্ষণের মধ্যে শরীর থেকে পানি বের করে দেয় জেলিফিশ। সেই কারণে প্রসেস করা যায় না। এলাম ব্রাইন নামে একটি প্রসেসে এটিকে ধুয়ে ফেললে তাৎক্ষণিক শক্ত হয়ে যায় এবং পরবর্তীতে ব্যবহার করা যায়। জেলিফিশ মানেই যে ভয়ংকর সেই ধারণা থেকে বের হয়ে যেতে হবে বলছেন তারা। কারণ বঙ্গোপসাগরে আধিক্য থাকা সাদা নুইন্না প্রজাতির জেলিফিশ বিষাক্ত নয় বলে দাবী তাদের।

বিজ্ঞানীদের ধারণা, ৫০০ কোটি বছর আগে জেলিফিশের জন্ম হয়েছিল, যা ডাইনোসরের জন্মেরও আগে। মানুষ ব্যবহার না করলেও সাগরের খাদ্য চক্রের জন্য এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রাণী। তবে এটি আহরণ করা গেলে সুনীল অর্থনীতিতে নতুন দিগন্ত উন্মোচন হবে, পাল্টে যাবে দেশের অর্থনীতি। কারণ যে পরিমাণে বঙ্গোপসাগরে জেলিফিশের আধিক্য রয়েছে তা আহরণ করে শেষ করা যাবে না।

সর্বশেষ খবর

কক্সবাজারে ডাকাতির প্রস্তুতিকালে ডাকাত দলের ৩ সদস্য কে গ্রেফতার করেছে ডিবি পুলিশ

আয়াছুল আলম সিফাত : কক্সবাজারে ডাকাতির প্রস্তুতিকালে ডাকাত দলের ৩ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। শনিবার (১ এপ্রিল) ভোরে কক্সবাজার পৌরসভার ৮ নং...

টেকনাফে মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের মাদক বিরোধী সভা অনুষ্ঠিত

মোহাম্মদ শাহীন,টেকনাফ : মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের উদ্যোগে টেকনাফ পৌরসভায় মাদকবিরোধী আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার মৎস্যজীবী সমিতি হলরুমে অনুষ্ঠিত সভায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের টেকনাফ বিশেষ জোনের পরিদর্শক...

সাংবাদিক সংসদ কক্সবাজার’র আলোচনা সভা ও ইফতার মাহফিল সম্পন্ন

নিজস্ব প্রতিবেদক : সাংবাদিক সংসদ কক্সবাজারের উদ্যোগে আলোচনা সভা ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার সন্ধ্যায় হোটেল মিশুকের হল রুমে সাংবাদিক সংসদ কক্সবাজারের সভাপতি এম.এ আজিজ...

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে গোলাগুলিতে নিহত ১, গুলিবিদ্ধ এক শিশু

  শামীমুল ইসলাম ফয়সাল, উখিয়া: উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে গোলাগুলিতে এক বৃদ্ধা নিহত হয়েছেন, এ ঘটনায় ১২ বছরের এক শিশুও গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হয়েছে। নিহত বৃদ্ধা ক্যাম্প-৮...