তৌফিক লিপু :
উখিয়ার কুতুপালং রোহিঙ্গা কাম্পের এক বাসিন্দার স্ত্রী’র শরীরে এক বছর আগে এইচ আই ভি ভাইরাস শনাক্ত হয়। এক বছর পর এসে সে শারীরিক অসুস্থতা অনুভব করলে কক্সবাজার সদর হাসপাতাল ল্যাবে পরিক্ষায় তার শরীরেও ধরা পড়ে এইচ আই ভি ভাইরাস। তাদের ঘরে ৫ সন্তান, তাদেরও পরীক্ষা করাতে চান তিনি।
৪ বছরের এক শিশু কন্যা বাবার কোলে চড়ে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে এসেছিলো চিকিৎসা নিতে। বিভিন্ন পরিক্ষা নীরিক্ষার পর ল্যাব থেকে জানানো হয় তার শরীরে পাওয়া গেছে এইডস রোগের জীবানু। সেই শিশুটির চিকিৎসা চলছে সদর হাসপাতালে।
কক্সবাজার সদর হাসপাতালের দেয়া তথ্য মতে, এইচ আই ভি ভাইরাস বহনকারীর সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলছে। ২০১৫ সাল থেকে এ পর্যন্ত মরনব্যাধী এইডস আক্রান্ত হয়েছে ৯৮৮জন। তারমধ্যে ৭৯৫ জন রোহিঙ্গা এবং ১৯৩ জন স্থানীয় বাসিন্দা, আক্রান্তদের মধ্যে নারী ৫০৪ জন,পুরুষ ৩৬৮ জন,শিশু কন্যা ৫৮ এবং শিশু পুত্র ৫৫ জন, আক্রান্তদের মধ্যে ৩ জন রয়েছে তৃতীয় লিঙ্গের। আক্রান্ত নারীদের মধ্যে ১০০ জন গর্ভবতী বলে জানা গেছে। এ পর্যন্ত এইডস আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে ১১৬ জন, এর মধ্যে রোহিঙ্গা ৫৯ জন এবং স্থানীয় ৫৭ জন,এইডস আক্রান্ত হয়ে জুলাই মাসে মারা গেছে ২ জন স্থানীয়।
এইচ আই ভি পরিক্ষার জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতাল ল্যাবে প্রতিদিন বাড়ছে মানুষের সংখ্যা। গেল ১ বছরে ১ হাজার ৩শ ৪২ জন ব্যক্তির শরীর থেকে এইডসের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। কক্সবাজার সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক ডা. আশিকুর রহমান বলছেন, গেল বছরের তুলনায় এ বছর এইডস আক্রান্ত হার বেশী। তিনি বলছেন, সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন এমন এইডস রোগীদের মধ্যে গর্ভবতী নারীর পাশাপাশি রয়েছে যক্ষার উপসর্গ।
এদিকে এইডস আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় আশংকার কথা বলছেন রোহিঙ্গাদের নিয়ে কাজ করা সংস্থা শরনার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার কার্যালয়। সংস্থার চিকিৎসা সমন্বয়ক ডা. আবু তোহা বলছেন, রোহিঙ্গাদের অনেকেই এইচ আই ভি ভাইরাস বহন করায় স্থানীয়দের মধ্যে বাড়ছে ঝুঁকি।
জুলাই মাসে এইডস আক্রান্ত হয়েছে ১৭ রোহিঙ্গা। আক্রান্তের মধ্যে নারী ও শিশুর সংখ্যা ১১ জন। তারমধ্যে গর্ভবর্তী নারীর সংখ্যা ৩ জন।