সিয়াম সোহেল:
জীবন এখানে থমকে দাঁড়ায় যেন। সেই শিশুকাল থেকে মাছ ধরা, জীবনের সবটুকু শেষ করেও ভাগ্যের কোনো বদল হয়নি। জীবনের শেষপ্রান্তে এসে বয়সী জেলেরা তাই হিসাব মেলাতে পারেন না। জীবনের বাকি কটা দিন হয়তো এই কাজ করেই জীবনটা পার করে দেবেন। পরের প্রজন্ম মৎস্যজীবী হলেই যেন জেলে জীবনের পরম প্রশান্তি।
জেলেদের জীবনের হিসেবটা এমনই। নানামুখী সংকটের ভেতর দিয়ে অতিক্রান্ত এই জীবনের হিসেব মেলানোটাই যেন কঠিন। জীবনভর মাছ ধরে কাটানো বেশকিছু মানুষের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে তাদের অভিব্যক্তি। প্রত্যেকের কণ্ঠেই যেন আক্ষেপের সুর। জীবনের ফেলে আসা সেই দিনগুলোর দিকে তাকিয়ে দেখেন অবশিষ্ট কিছুই নেই। না হয়েছে এক টুকরো সম্পদ, না পেরেছেন ছেলে-মেয়েদের লেখাপড়া করাতে, উপরন্তু দেনার দায় বেড়েছে অনেক গুণ। আলাপকালে জেলেরা তাই জীবনকে সপে দেন নিয়তির হাতে।
বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ শুটকি মহাল কক্সবাজার নাজিরাটেকে। এখানেও কতশত গল্প অসমাপ্ত রয়ে যায় অগোচরে। ন্যায্যমূল্যের অভাবে শুটকির মত শুকিয়ে যায় তারা। সারাদিন রোদে পুড়ে বিনিময় পান ৩০০ টাকা, তাদের দিনাতিপাত এই সমাজ যেন দেখেও দেখে না। কথা তিনজন জেলের সাথে তারা বলছেন,জিবনের বেশীর ভাগ চলে গেছে এ কাজ করে, এখন পেশা বদল সম্ভব নয়। তাই এতেই সুখ আর দুঃখ ভাগাভাগি করে চলতে হবে। অপর দুজন জেলে একসাথে বলে উঠলো, মাছ পেলে মহাজনও শান্তি আমরাও শান্তি। তাই সমুদ্র আমাদের কি দিলো তার উপরউ নির্ভর করে আমাদের জিবন। এসব জেলেরা বলছেন সরকারি উদ্যোগে জেলেদের কল্যানে ট্রাস্ট থাকা জরুরি, যাতে দুর্যোগ, অসুখ বিসুখ,যে কেনো সংকট মোকাবেলায় সহায়তা পাওয়া যায়।
সমুদ্রের পাড়ে নোঙ্গর করা বোট,সূর্যের কিরণ, আকাশে কাক চিলের উল্লাস, জেলেদের জালবুনা, মহাজনদের কর্মযজ্ঞ, শীতের কোয়াশা ভেজা সকাল এ যেন অন্যরকম অনুভুতি।