আজিম নিহাদ:
কক্সবাজার শহরের কলাতলীর আমারী রিসোর্ট নামে একটি হোটেলের কক্ষ থেকে এক নারীর মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। তবে তাকে যে ব্যক্তি হোটেলে নিয়ে গিয়েছিলেন তিনি উধাও। মঙ্গলবার দুপুরে হোটেলের ৪০৮ নং কক্ষ থেকে ওই নারীর লাশ উদ্ধার করা হয়। এসময় আরিফুল ইসলাম রানা নামে হোটেলের এক কর্মচারীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে যায় পুলিশ। তিনি রাতে হোটেলে কর্মরত ছিলেন।
ট্যুরিস্ট পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার মিজানুজ্জামান জানান, তারা লাশটি উদ্ধার করে মর্গে পাঠিয়েছেন। ঘটনা অনুসন্ধান করে অপরাধীকে সনাক্ত করার চেষ্টা করছেন।
এদিকে হোটেলের রেজিস্ট্রার এবং সিসিটিভির ফুটেজ দেখে জানা গেছে, ১৮ সেপ্টেম্বর সকাল ১০ টায় আমারী রিসোর্টের ১০৮ নাম্বার কক্ষ ভাড়া নেন মো. সাগর নামে এক ব্যক্তি। হোটেলের রেজিস্ট্রারে তার ঠিকানা উল্লেখ করেন, কুমিল্লার বাগদিয়া ৪ নাম্বার ওয়ার্ডে। ওই সময় তিনি একাই হোটেলের ওই কক্ষে অবস্থান করেন।
দুদিন পর ২০ সেপ্টেম্বর রাত ১০ টা ২৫ মিনিটে হোটেলের ওই কক্ষে এক নারীকে নিয়ে আসেন সাগর নামের ওই যুবক।
সিসিটিভির ফুটেজে দেখা যায়, ওই নারীকে নিয়ে হোটেলে প্রবেশের সময় অভ্যর্থনায় দায়িত্বরত কর্মচারী বা কর্মকর্তা কেউই তাকে বাঁধা দেয়নি। ১৮ সেপ্টেম্বর ওই যুবক একাই ১০৮ নাম্বার কক্ষ ভাড়া নিলেও ২০ সেপ্টেম্বর রাত ১০.২৫ মিনিটে দেখা যায় ওই নারীকে নিয়ে সে প্রবেশ করছে ৪০৮ নাম্বার কক্ষে। পরে রাত ১ টা ৭ মিনিটে ওই কক্ষ থেকে বেরিয়ে পেছনের দরজা দিয়ে হোটেল ছাড়েন সাগর।
সাগরের পূরণ করা রেজিস্ট্রার খাতায় ওই নারীর নাম উল্লেখ করা হয় ফারজানা। তবে তার কোন ঠিকানা উল্লেখ করা হয়নি।
হোটেলের কর্মচারীরা জানিয়েছেন, সকাল ৮ টার দিকে রুমের লাইট না জ্বলতে দেখে সন্দেহ হয় এক কর্মচারীর। পরে হোটেলে কাজ করতে আসা এক কাঠমিস্ত্রীর সহায়তায় রুমের দরজা খুলে দেখতে পান মেয়েটির লাশ পড়ে রয়েছে। তবে কেনো হঠাৎ ওই রুম চেক করতে গিয়েছিল এমন প্রশ্নে কোন উত্তর দেননি ম্যানেজার।
হোটেলের ম্যানেজার মনজুরুল আলমের দাবী, সাগর তাদেরকে জানিয়েছিলেন কুমিল্লা থেকে তার স্ত্রী আসবেন। তাই তারা ওই নারীর কোন তথ্য সংরক্ষণ করার প্রয়োজন মনে করেননি। কিন্তু নিয়ম অনুযায়ী প্রতিটি গ্রাহকের সঙ্গীয় সকলের তথ্য সংরক্ষণ করতে হবে।
রাতে হোটেলে উঠার সময় ওই নারী কোন রেজিস্ট্রারে স্বাক্ষর করেননি। হোটেলে ঢুকেই চলে যান কক্ষে। সেসময় ডিউটিতে ছিলেন আরিফুল ইসলাম রানা।
অভিযোগ উঠেছে, বিভিন্ন পর্যটককে যৌনকর্মী সরবরাহ করেন হোটেলের কর্মচারীরা। একারণে তাদের তথ্য সংগ্রহ করে না। এই অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে কথা বলতে রাজি হননি কর্মচারী আরিফুল ইসলাম রানা।
ওই নারী প্রকৃতপক্ষে সাগরের স্ত্রী ছিলেন কিনা, পরিকল্পিত খুন কিনা, নাকি হোটেলের কর্মচারীরা তাকে সরবরাহ করেছিল এমন নানা প্রশ্নের উত্তর মিলছে না। এসব জট পুলিশের তদন্তে দ্রুত বের হয়ে আসবে এমনটাই প্রত্যাশা সচেতন মহলের।