তানভির শিপু:
সম্প্রতি একটি ভিডিও বার্তায় রোহিঙ্গা নেতা মুহিবুল্লাহর আশা ছিলো মিয়ানমারে ইউএনজি সরকার গঠন হলে রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফিরিয়ে নেয়া হবে। সে লক্ষ্যে ইউএনজি সরকারের সাথে একটি চুক্তিও করেন রোহিঙ্গারা। কিন্তু বুধবার মুহিবুল্লাহর সেই সকল আশা কেড়ে নেয় রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী গোষ্ঠী আরসা।
ক্যাম্পে নিজ কার্যালয়ে ছিল মুহিবুল্লাহ। প্রতিদিনকার মতো বুধবারও তার সংগঠনের নেতা কর্মীদের সাথে রোহিঙ্গাদের অধিকার নিয়ে কথা বলছিলেন তিনি। প্রত্যাবাসন নিয়েও কথা হয় তাদের সাথে। রাতে টিটিএনকে এসব কথা বলেন মুহিবুল্লাহর ছোট ভাই হাবিব উল্লাহ। আরসার সন্ত্রাসীরা তার ভাইকে হত্যা করেছে দাবি করে হাবিব উল্লাহ বলেন, রোহিঙ্গাদের অধিকার নিয়ে কাজ করার কারনে সন্ত্রাসীদের পথের কাটা ছিলেন তিনি।
বুধবার রাত ৮ টায় ক্যাম্পের অভ্যন্তরে অন্যান্য রোহিঙ্গা নেতাদের সাথে নিয়ে নিজ কার্যালয়ে অবস্থানকালীন সন্ত্রাসীরা সরাসরি তাকে লক্ষ্য করে ৫ রাউন্ড গুলি ছুড়ে। এরপর সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়্। পরে মুহিবুল্লাহকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় কুতুপালং এমএসএফ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে। মুহিবুল্লাহ আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিচ এন্ড হিউম্যান রাইট নামে একটি সংগঠনের চেয়ারম্যান ছিলেন। এদিকে সন্ত্রাসীদের টার্গেট ছিল শুধুই মুহিবুল্লাহ। বন্দুক এবং ধারালো অস্ত্র নিয়ে আসা সন্ত্রাসীরা মুহিবুল্লাহকে গুলি করার পর তার সাথে থাকা অন্যান্য লোকজনদের সরিয়ে দেন বলে জানান প্রত্যক্ষদর্শীরা।
রোহিঙ্গাদের সম্মান এবং মর্যদার সাথে নিজ দেশে ফেরাতে কাজ করছিলেন রোহিঙ্গাদের শীর্ষ এই নেতা। তার মৃত্যুতে প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়াটি থমকে যাওয়ার আশংকা করছেন কক্সবাজারের স্থানীয় নাগরিক সমাজের নেতা কলিম উল্লাহ।
মুহিবুল্লাহ নিহতের পরপরই পুরো ক্যাম্প জুড়ে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে কোনো সন্ত্রাসী গ্রুপ যেনো মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে না পারে সে লক্ষ্যে কাজ করছে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা, এমনটাই জানালেন ক্যাম্পের আইনশৃঙ্খলার দায়িত্বে থাকা ১৪ এপিবিএন অধিনায়ক।
রোহিঙ্গাদের অধিকার নিয়ে কাজ করে আসা রোহিঙ্গাদের শীর্ষ এই নেতা ২০১৯ সালে ১৭ জুলাই যুক্তরাষ্ট্রের হোয়াইট হাউজে সাবেক মার্কিট প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাথেও দেখা করেন। এছাড়াও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে রোহিঙ্গা অধিকার নিয়ে মুহিবুল্লাহর ছিলো সরব আওয়াজ।