নিজস্ব প্রতিবেদক:
শ্রমিক বা কোন প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা হিসেবে নয়, সন্তানের কাছে অবসর সময় কাটাতে আমেরিকায় যান কক্সবাজার শহরের চাউল বাজার এলাকার ঞো ওয়ান রাখাইন। কিন্তু সেখানে গিয়ে বসে থাকেননি তিনি। শুরু করেন হস্তশিল্পের কাজ। নকশীকাঁথা সহ নানা আসবাবপত্র তৈরী করে সেগুলো বিক্রি করেন আমেরিকায়। হস্তশিল্পের এসব পণ্য বিক্রি করে যা আয় হয় তা রেমিট্যান্স হিসেবে পাঠিয়ে দেন বাংলাদেশে। এক বছরে ২০ লাখ ৭০ হাজার টাকা পাঠিয়ে এবছর কক্সবাজার জেলায় নারী হিসেবে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স প্রেরণকারীর সম্মাননা পেয়েছেন সংগ্রামী এই নারী। একদিনে যেমন আমেরিকার মতো দেশে বাংলাদেশের হস্তশিল্পের নৈপুণ্যতা তুলে ধরেছেন অন্যদিকে রেমিট্যান্স পাঠিয়ে সমৃদ্ধ করেছেন দেশকে। সেইসাথে তিনি কক্সবাজারের ইতিহাসে প্রথম কোনো রাখাইন নারী যিনি সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স প্রেরনকারির সম্মাননা পেলেন।
রোববার আন্তর্জাতিক অভিবাসন দিবসের অনুষ্ঠানে ঞো ওয়ান রাখাইনের পরিবারকে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স প্রেরণকারীর সম্মাননা তুলে দেন জেলা প্রশাসক মো. শাহীন ইমরান। ঞো ওয়ান রাখাইনের পক্ষে সম্মাননা গ্রহণ করেন তার মেয়ে মা ছেন হ্লাইন।
মায়ের এমন অর্জনে খুশি ব্যাংক এশিয়ায় কর্মরত মেয়ে। তার দাবী, সারাজীবন সংগ্রাম করে সন্তানদের সফলতার শিখরে নিয়ে গেছেন। এখন আমেরিকায় অবসর সময় কাটাতে গিয়ে দেশকে সমৃদ্ধ করছেন। মায়ের জন্য গর্বিত তিনি।
বৈধপথে বিদেশ যাওয়ার পরামর্শ দিয়ে বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতির সদস্য সৈয়দা নুরে নাবিলা তাবাসসুম বলেন, অবৈধপথে বিদেশ গেলে বিভিন্নভাবে হয়রানির শিকার হয়। বিভিন্ন গ্রুপের পাল্লায় পড়ে পাচারও হয়ে যায়। কিন্তু বৈধপথে বিদেশ গেলে নিজের অর্থ সংকট যেমন লাঘব করা যায় তেমনি রেমিট্যান্স পাঠিয়ে দেশের উন্নয়নে অবদান রাখা যায়।
বিদেশ যাওয়ার ক্ষেত্রে দালালের খপ্পরে না পড়ে বৈধ পথ অবলম্বন করার পরামর্শ দিয়ে জেলা প্রশাসক মুহম্মদ শাহীন ইমরান প্রবাসীদের ব্যাংকের মাধ্যমে রেমিট্যান্স পাঠিয়ে দেশের উন্নয়নে অবদান রাখার আহ্বান জানান।
এবার জেলায় পুরুষ হিসেবে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স প্রেরণকারীর সম্মাননা পেয়েছেন ইব্রাহিম ওসমান আফালতুন। এই দুবাই প্রবাসী এবছর দেশে রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন ২ কোটি ১১ লাখ টাকা।