নিজস্ব প্রতিবেদক :
পাবজি গেম, পর্নোগ্রাফি ও বিভিন্ন নিষিদ্ধ ওয়েবসাইটে আসক্তির জেরে বাবা-মায়ের সঙ্গে অভিমান করে আত্মগোপনে যাওয়া ১৫ বছর বয়সী এক কিশোরকে উদ্ধার করেছে র্যাব -৭।
শনিবার (৭ মে ২০২২) বিকেলে র্যাব-৭ এর চান্দগাঁও ক্যাম্পে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এম এ ইউসুফ।
এসময় তিনি বলেন, গত বছরের ১০ ডিসেম্বর চকবাজারের বাসা থেকে বের হয়ে যায় ওই কিশোর। ছেলেকে না পেয়ে ভিকটিমের বাবা-মা চট্টগ্রামে চকবাজার থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করে। পরে জিডির কপিসহ র্যাবের কাছে একটি আবেদন করা হয়। ওই কিশোর দশম শ্রেণির ছাত্র। ১২ বয়স বয়সেই তাকে স্মার্ট ফোন দেওয়া হয়। গত দুই বছর ধরে সে পাবজি গেমে আসক্ত। পাবজি গেম বাংলাদেশে নিষিদ্ধ হলেও সে বিভিন্ন পন্থা অবলম্বন করে সারাক্ষণ পাবজি ও অন্যান্য এডাল্ট ওয়েবসাইটে বিচরণ করত। যার কারণে পরিবারের সদস্যরা তাকে প্রায় সময় বকাঝকা করতেন।
গত বছর১০ ডিসেম্বর দুপুরে মোবাইলে ফ্রি-ফায়ার গেমস খেলছিল ঐ কিশোর। তখন তার বাবা-মা তাকে বলে “লেখা পড়া বাদ দিয়ে গেমস খেলছো কেন” এক পর্যায়ে তার বাবা রাগের মাথায় বলে “তোমার রোজগার তুমি করে খাও” এই কথা শোনার পর ভিকটিম অভিক দে তার বাবা মার সাথে রাগ করে কাউকে কিছু না বলে বাসা থেকে বের হয়ে যায়। ঘটনার দিনেই ভিকটিম অভিক দে চট্টগ্রাম শহরের অলংকার এলাকার একটি রেষ্টুরেন্টে চাকুরী নেয়। সেখানে ১ মাস ২২ দিন চাকুরী করার পর সে পরবর্তীতে চান্দগাঁও নতুন থানার মোড় এলাকার আরেকটি রেষ্টুরেন্টে চাকুরী নেয়। সেখানে সে ফেব্রিুয়ারী ১ তারিখে কাজ করতে থাকে কাজের এক পর্যায়ে ওখানকার এক ষ্টাফের কথায় ক্ষুদ্ধ হয়ে চাকুরী ছেড়ে দিয়ে সে পুনরায় চান্দগাঁও নতুন থানার মোড় নিউ চান্দগাঁও রেষ্ট হাউজে চাকুরী নেয়। সেখানে ১৫ ফেব্রুয়ারি তারিখ হতে উদ্ধার হওয়া পর্যন্ত চাকুরীতে কর্মরত ছিল।
র্যাবের এই কর্মকর্তা আরো বলেন নিখোঁজ ভিকটিম অভিক দে প্রাপ্ত বয়স্কদের একটা গ্রুপের সাথে চলাফেরা ছিলো। এই গ্রুপে অভিক দে অপহরন মামলার তিন আসামী হান্নান, লিও দাস, ও জয় নাম রয়েছে। হান্নান ইউরোপের পোল্যান্ড থাকে এবং জয় থাকে কাতারে। মূলত এরা বিশেষ করে যখন দেশে ছূটিতে থাকে তখন এ উশৃঙ্খল ও বিকৃত রুচির গ্রুপের কার্যক্রম বেড়ে যায়। নিখোঁজের সময় হান্নান ও জয় ছুটিতে ছিল। এ গ্রুপের সদস্যরা পরস্পর এডাল্ট ভিডিও শেয়ার করত ও ইন্টারনেট পর্নোগ্রফিতে আসক্ত ছিল। পাবজি খেলার পাশাপাশি অভিক দে এসবে আসক্ত হয়ে পড়ে। সে গোপনে বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ায় একাধিক একাউন্ট চালাত ও বেনামি ৫/৬ টি সিম ব্যবহার করত। পড়াশুনা প্রায় ছেড়ে দিযে সে সারাদিন এসব নিয়ে পড়ে থাকত বলে বাবা-মা কড়া শাসন শুরু করলে সে তার গ্রপের অন্যান্য এডাল্ট দের মত স্বাধীনতার খোঁজে বাড়ি হতে বের হয়ে যায়। তার হদিস কেউ যেন না পায় এজন্য সে তার ব্যবহৃত মোবাইল টিও রেখে যায়। কিন্তু পরে নয়ন দে নামে এক ছদ্মনামে ফেসবুক একাউন্ট খোলে। আত্মগোপন থাকাকালীন সে নিজেকে নয়ন দে নামে পরিচয় দেয় এবং বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন রকম ঠিকানা দিয়ে অবস্থান করে।