শিপ্ত বড়ুয়া, রামু :
কক্সবাজারের বিভিন্ন উপজেলায় অনাবৃষ্টির কারণে ব্যহত হচ্ছে আমন ধান চাষ। প্রতি বছর আষাঢ়ের প্রথম সপ্তাহ থেকে ধান রোপন শুরু হলেও এবারে কৃষকেরা পড়েছেন অনাবৃষ্টি ও তাপদাহে বিপর্যয়ের মুখে। ফলে উপজেলাগুলোর আমন চাষীদের এবারে আমন আবাদ নিয়ে তৈরি হয়েছে অনিশ্চয়তা।
পূর্ব রাজারকুল গ্রামের কৃষক আবু তাহের। এবারে তিনি এক একর জমি বর্গা নিয়েছেন আমন চাষের জন্য। কিন্তু আষাঢ় শেষ হয়ে শ্রাবণ মাসের শুরুতেও বৃষ্টি না হওয়ায় আমন ধান রোপন করতে পারছেন না। তিনি জানান, এবারে আর আমন চাষ হবে না। হলেও আশানুরূপ ফলন ঘরে উঠবে না। বৃষ্টি না হওয়ায় পাশের এক গভীর নলকূপ থেকে পানি নিয়ে চাষ করছি। কিন্তু তীব্র তাপদাহে নলকূপের পানিতে চাষ সম্ভব হচ্ছে না।
বড় বিপর্যয়ের মুখে পড়েছেন বিলের মাঝামাঝি থাকা আমন চাষীরা। রামু উপজেলার ফঁতেখারকুলের চাষী আবদুস সবুর বলেন, এবছর আমি তিন একর জমিতে আমন চাষের জন্য বীজ থেকে চারা উৎপাদন করেছি কিন্তু সে ধান চারা আর রোপন করতে পারছি না। শ্রাবণ মাসের মাঝামাঝিতেও বৃষ্টির কোন দেখা নেই। তাছাড়া জমি বিলের মাঝামাঝি হওয়ায় কোন নলকূপ বা অন্য উৎস থেকে পানিও দিতে পারছি না। এবছর বড় ক্ষতির মুখে পড়তে হবে চাষীদের।
এদিকে কক্সবাজার জেলার বিভিন্ন উপজেলায় বৃষ্টির আশায় নামাজ আদায় ও প্রার্থনা করতে দেখা গেছে। জেলার ঈদগাঁও, কাউয়ারখোপ, ঈদগড়, উখিয়ারঘোনা, গর্জনিয়া, কচ্ছপিয়াসহ বিভিন্ন জায়গায় কৃষকেরা বিলের মাঝেই বৃষ্টির প্রার্থনায় নামাজ আদায় করেছেন।
গেলো মঙ্গলবার (২ আগষ্ট) ঈদগাঁহ আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে এলাকার শত শত কৃষকেরা নামাজ শেষে অনাবৃষ্টি থেকে মুক্তির জন্য বিশেষ মোনাজাত করতে দেখা গেছে।
রামু উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে এবছর উপজেলার মোট ৯৪৫০ হেক্টর জমিতে মোট ২৪ জাতের ধান চাষ হওয়ার লক্ষ্যমাত্রা আছে। উবষী প্রায় ১৭টি, হাইব্রিড ৬ টি ও স্থানীয় এক জাতের আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিলো। তার মধ্যে আনুমানিক মোট ১১০ থেকে ১৫০ হেক্টর জমিতে চাষাবাদ হচ্ছে। বৃষ্টি না থাকায় আমন চাষ ব্যহত হওয়ার কথাও জানান উপজেলা কৃষি অফিস।
এদিকে কবে নাগাদ বৃষ্টির সম্ভাবনা আছে সে বিষয়ে জানতে জেলা আবহাওয়া কার্যালয়ের আবহাওয়াবিদ আব্দুল হামিদের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি টিটিএনকে বলেন, আজকে থেকে বৃষ্টির সম্ভাবনা আছে। গতমাসে যেভাবে খরা ও তাপদাহ চলেছে তা এবার কমে আসবে বলেও জানান এই কর্মকর্তা।